রবিবার, ৩ মে, ২০২০

সভ্যতার পিছটান - ফারদিন শাহরিয়ার


হে সভ্যতা!

হে মানবসভ্যতা!

কি দেখছো?
কি ভাবছো?

দেখছো কি আমাদের?
যারা সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে উঁচু শৃঙ্গতে? 
নাকি ভাবছো

"কোত্থেকে এলো এই বদ্ধ উন্মাদেরা?"

হ্যা,  ভাববেই তো....
কারণ তোমরা শিক্ষিত।  শিক্ষার অন্ধকারে ডুবে আছো।

আমরাতো বদ্ধ উন্মাদ।
তোমরা কি?

তোমরা উগ্র উন্মাদ।  তোমাদের উন্মাদনা
আমাদের আত্মমুক্তির বিরুদ্ধে।

রাস্তায় দেখলে বলো,
"দেখ দেখ সেই উন্মাদটি যাচ্ছে।  উলটাপালটা বকা যার স্বভাব।  শুনেছি কবিতাও লেখে।  যেখানে সেখানে,
পথে ঘাটে,
অলিতে গলিতে,
দোকানে দোকানে......

সেখানে বসলে তারা পাগলের মত করে কবিতা আবৃত্তি করে।
পারে না আবৃত্তি করতে
বরং
চিৎকার,  চেঁচামেচি করে।  পাগল, উন্মাদ।
মনে তো হয় নেশা করেই....."

হে সভ্য,
হে মানব সভ্য,

তোমরা ভাবো
তোমরা সুউচ্চ।
তোমরাই সুশিক্ষিত। 

হাসি পায়!
বড়োই হাসি পায়!

এতো হাসি পায় যে
পেটের নাড়িভুঁড়ি ফেটে যেতে চায়!

করুণা হয় তোমাদের জন্য।  আহা....
এতো অল্প বয়সে অন্ধ হয়ে গেলে?


তোমাদের কাছে নেশা মানে আফিম,  মদ.......

তোমরা,
তোমাদের ক্ষুদ্র,
অপক্ব মস্তিষ্কের সৃষ্ট মায়াজালে বাঁধা তোমাদের প্রতিটি চিন্তা চেতনায়।

তোমরা কর্পোরেটের নেশা খেয়ে চলো।  জানো?
আমাদের আফিমের ঘোর,
মদের ঘোর
ঘন্টা কয়েক।
আর তোমাদের...... 
তোমাদের
কর্পোরেটের ঘোর,
মোহের ঘোর,
লোভের ঘোর,
অন্ধ শিক্ষার ঘোর
আমৃত্যুর......
মৃত্যুর আগেও যে ঘোর লেগে থাকে।

বড়োই করুণা হয়
যখন দেখি,
আহা,
বেচারাদের পচনধরা মগজের তৈরি করা কিছু উদ্ভট টার্ম.....
সমাজ,  সামাজিকতা, কর্পোরেট,  স্ট্যাটাস ইত্যাদি ইত্যাদি.......

আমরা চুদি না তোমাদের শিক্ষা,  তোমাদের মুখস্ত করা টার্মের বিষয়-আশয়.....

তোমরা কি শিখাবে আমাকে ঈশ্বরের মন্ত্র?  তোমরা কি দেখাবে ঈশ্বরের সৌন্দর্য? 

ঘেন্না লাগে তোমাদের ঘেন্না লাগে.....

তাই তো কুকুরের মুখে তুলে দেই বিস্কুটের টুকরা।
পাখির ডাকে শুনি ঈশ্বরের মূর্ছনা।  পাহাড়ের ঘোর লাগা হিমশীতল ডাক,  সবুজ ঝর্ণাধারা।

পারবে আমায় দিতে দু'মুঠো শান্তি?  পারবে দিতে পর্দাহীন চোখ?

পারবে না,  পারবে না দিতে।

কারণ তোমরা নেশায় চুর..... নেশা,  মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।  যে নেশা সৃষ্টিবিধ্বংসী, হুমকি।  তাই আমরা তোমাদের বিরুদ্ধাচরণ করি.... গলা ফাটিয়ে চিৎকার করি।

পারো আমাদের মত চিৎকার করতে?  পারো আমাদের মত কাঁদতে?

পারো না।
জীবনেও পারবে না।

কারণ তোমরা দুর্বল।  তোমাদের কোন সৃষ্টি নেই।

আমাদের আছে।
আমাদের আছে বিধায়
আমরা হাহাকার করতে পারি..... চিৎকার করতে পারি.....
কাঁদতে পারি।

নিজেদের দুর্বলতাকে তোমরা ঢেকে দাও মিথ্যার আবরণে।
বলো, “ছেলেদের কাঁদতে নেই”।   কান্না,  চিৎকার
দুর্বলতার লক্ষণ।  কাপুরুষতার লক্ষণ।

অনুর্বর মস্তিষ্কজীবী তোমরা।  শেকল পরানো যাদের উদ্দেশ্য। 
তোমরা ভাবো আমাদেরই মুক্তি দরকার
আর
সে দায়িত্ব তোমাদের......

আমি দেখি,
অন্ধত্বের সফেদ ছড়ি তোমাদের হাতে
সামনের দিকে ধেয়ে ধেয়ে যাচ্ছে।

আহারে! এতো অল্প বয়সে অন্ধ হয়ে গেলে?  এতো সহজে বন্ধ্যা হয়ে গেলে?

x

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

অবশেষে চলে এলো হুলুস্থুল (অ)সুখের নিদানকাল সংখ্যা!

কথা ছিলো ঈদের আগেই আসবে নিদানকাল সংখ্যা। কিন্তু ঈদের আগমুহুর্তে নতুন কিছু লেখা আসায় আমরা সিদ্ধান্ত নিই একটু দেরি হলেও ঈদের পরেই প্রকাশ করা হ...